আমাদের অন্ত্রে বসবাসকারী উপকারী ব্যাকটেরিয়ার ভূমিকার সঙ্গে পরিপাকতন্ত্রের সুস্থতার একটি গভির সম্পর্ক আছে। এই ব্যাকটেরিয়াগুলো ক্ষতিকর ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সাহায্য করে থাকে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণে অনেক রোগীরই ডায়রিয়া, বদহজম, বমি, অরুচি প্রভৃতি বিভিন্ন ধরণের পরিপাকতন্ত্রজনিত উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। কাজেই খাবারের বিষয়ে আমাদের খুব বেশি সচেতন হতে হবে। বিশেষ করে করোনা মহামারির এ সময় অন্ত্রের জন্য উপকারী খাবারগুলো খাওয়ার জন্য পরামর্শ দিচ্ছেন গবেষকেরা এবং চিকিৎসরা।
* অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়াগুলোর জন্য ভালো বা ব্যাকটেরিয়াবান্ধব কিছু খাবার আছে যেগুলো আমাদের খুবই গুরুত্বপূর্ণ। উচ্চ আঁশযুক্ত খাবার, যেমন যব, ভুট্টার তৈরি খাবার, লাল চাল অন্ত্রের জন্য উপকারী। এ ছাড়া ফলের মধ্যে আপেল, কলা; মসলা যেমন আদা, পেঁয়াজ; ডাল, ফ্ল্যাক্সসিড তেল ব্যাকটেরিয়াবান্ধব ইত্যাদি স্বাস্থবোধক খাবার আমাদের খেতে হবে।
প্রোবায়োটিক বা উপকারী অণুজীব পাওয়া যায় কিছু খাবার থেকে। এগুলো হলো দই, লাচ্ছি, ঘোল, পনির প্রভৃতি দুগ্ধজাত খাবার। এগুলো অন্ত্রের জন্য খুবই উপকারী ব্যাকটেরিয়ার বংশবৃদ্ধিতে সহায়ক। এর ফলে পরিপাকতন্ত্রের গায়ে একটি স্বাস্থ্যকর আবরণ তৈরি হয়। তাই করোনাভাইরাসসহ অন্যান্য জীবাণু অন্ত্রের কোষে সংযুক্ত হতে বাধা পায়।
ধূমপান, মানসিক চাপ এবং অপ্রয়োজনে অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণে অন্ত্রের উপকারী জীবাণু ক্ষতিগ্রস্ত করে থাকে । এর ফলে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে যায় এবং রোগী খুবই দুর্বল হয়ে পড়ে। কাজেই করোনা মহামারির এই সময় বিষয়গুলোয় সচেতন হতে হবে, ধূমপান বর্জন করতে হবে। জ্বর হলেই অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া যাবে না খেলে আমরা আরো দুর্বল হয়ে পড়বো। আগে আমাদের চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
অন্ত্রের এসব উপকারী ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা ও পরিমাণ অনেকটাই নির্ভর করে আমাদের জিনগত বৈশিষ্ট্য, খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রার ওপর। জিনগত বৈশিষ্ট্য পাল্টানো না গেলেও সুনিয়ন্ত্রিত ও সুষম খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে আমরা এই ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়াতে পারি।
জেনিফার বিনতে হক : পুষ্টিবিদ
0 Comments